চকরিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে ভাংচুরের অভিযোগ : পুলিশের ১০ সদস্য প্রত্যাহার

চকরিয়া প্রতিনিধি : চকরিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে (মুক্তিযোদ্ধা কুঠির) ব্যাপক হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। সাগর নামের এক আসামিকে গ্রেফতারে চকরিয়া থানার পুলিশের একটিদল অভিযান চালাতে গিয়ে এ ঘটনাটি ঘটে।

বৃহস্পতিবার (৫মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মাঝির পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩ এসআই, ১ এএসআই সহ পুলিশের ১০ সদস্য প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ওইসময় মারধরে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে মুরাদুল ইসলাম সিফাত (২৭), স্ত্রী নেচারা বেগম(৬০), পুত্রবধূ শাহনাজ আক্তার(৩০), ফরিদা ইয়াসমিন (৩০), ফাতেমা ইয়াসমিন(২৮), সাবাহ নুর তাবাহ (১৮), সৌদি প্রবাসী নাতি হাসান আবুল কালাম(২৩), নাতি আয়ইমুন করিম সুহা (১১) ও নাতি আনোয়ারুল মোস্তাফিজ (১৪) কমবেশি আহত হয়েছে।

প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর স্ত্রী ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নেচারা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে আকস্মিকভাবে একদল পুলিশ আমাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাড়ির মেইন গেইট আটকে দিয়ে তারা বাড়ির ভেতর ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালায়। অহেতুক তল্লাশি চালায় ঘরের প্রতিটি কোণে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ ঘরের আসবাব, ফুলদানি ভাংচুর করে। ঘটনার একপর্যায়ে আমার ছেলে লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিমের স্ত্রী শাহনাজ আক্তারকেও আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, পুলিশ ঘরে ঢুকে আমার সদ্য বিবাহিত ভাই মুরাদুল করিম সিফাতকে তার স্ত্রীর সামনে বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। সে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। চকরিয়া থানার এসআই তুষ্ট লাল বিশ্বাস, কামরুল হাসান ও এএসআই জেড রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল আমার বাড়িতে ঢুকে এ তান্ডব চালায়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ওই এলাকায় আসামি গ্রেফতারে পুলিশের একটিদল একটি অভিযানে উল্টো আসামিপক্ষের লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে ভাংচুর, স্বজনদের মারধরের অভিযোগে পুলিশের ১০ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, চকরিয়ায় মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে ভাংচুর, স্বজনদের মারধরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের ১০ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারমধ্যে ৩জন এস আই, একজন এএসআই ও ৬ জন কনস্টেবল রয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অপরদিকে, ঘটনার পর চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুউদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) কাজী মতিউল ইসলাম, চকরিয়া থানার ওসি মো.হাবিুবুর রহমান, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনসহ চকরিয়া আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।